সুন্দরবনের গাছের কিছু বৈশিষ্ট্য – (Some characteristics of Sundarbans trees)
পরিবেশের কারণে সুন্দরবনের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য অন্য এলাকার তুলনায় ভিন্ন। সুন্দরবন উপকূলের নিচু নদীবেষ্টিত লবণাক্ত এলাকায় অবস্থিত। প্রতিদিন জোয়ার ভাটায় এই বন প্লাবিত হয়। জোয়ারের সময় সমূদ্রের লবণ পানিতে এই বন ডুবে থাকে। ফলে লবণাক্ততা এই বনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাই সুন্দরবনের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নানা অভিযোজনের আশ্রয় নিতে হয়। চলুন এক নজরে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাকঃ-



গাছের শ্বাসমূল মাটি ভেদ করে খাড়া হয়ে থাকে : জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি মাটির ভেতরের বাতাস বের করে ফেলে। ফলে গাছের শিকড় বাতাস থেকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন জোগাড় করতে পারে না। এজন্য শ্বাসমূল মাটির উপরে বের হয়ে থাকে।
সুন্দরবনের গাছগুলো তুলনামূলক খাটো : অন্যান্য বনে বিশাল লম্বা গাছ দেখা যায়। কিন্তু সুন্দরবনে গাছের উচ্চতা প্রায় একই রকম এবং খাটো প্রকৃতির। মূলত সুন্দরবনের গাছগুলো মাটির উপরিভাগ থেকেই প্রয়োজনীয় পানি ও পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে। মাটির গভীরে যাওয়ার দরকার পড়ে না। এজন্য গাছের শেকড় মাটির গভীরে যায় না। সুন্দরবনের গাছের শেকড়গুলো ঝোপের মতো। ফলে লম্বা গাছের জন্য যে মজবুত ভীত দরকার সেটা সম্ভব হয় না। গাছ একটু বড় হলেই ঝড়ো বাতাসে সেটা পড়ে যায়। গাছের এই বৈশিষ্ট্যের কারণে দূর থেকে সুন্দরবনকে দেখতে ঝোপের মতো লাগে।
গাছেই বীজ অঙ্কুরিত হয় : এখানের কিছু কিছু উদ্ভিদের ফল গাছে থাকা অবস্থায় অঙ্কুরিত হয় এবং লম্বা শেকড়ের মতো অংশ বের হয়ে থাকে। নরম কাঁদায় পড়ার সাথে সাথে যাতে মাটিতে গেঁথে যায় এবং জোয়ারের পানিতে ভেসে না যায়।
পাতায় প্রস্বেদন হয় কম : সুন্দরবনের গাছ থেকে প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় পানি কম বের হয়। কেননা লবণ পানি থেকে শুধু পানি গ্রহণ করতে গাছকে পরিশ্রম করতে হয়। এজন্য গাছ চেষ্টা করে যাতে বেশিক্ষণ পানি ধরে রাখতে পারে।
লবণ পানিতে বেঁচে থাকতে পারে : লবণ পানিতে বেঁচে থাকতে পারে সুন্দরবনের গাছগাছালি। এসব গাছে এমন প্রক্রিয়া আছে যাতে লবণ বাদে পানি ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে।